শনিবার, ০২ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৩২ অপরাহ্ন

নারীরা নিকাহ রেজিস্ট্রার হতে পারবেন না

নারীরা নিকাহ রেজিস্ট্রার হতে পারবেন না

স্বদেশ ডেস্ক:

বাংলাদেশের সামাজিক ও বাস্তব অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে নারীরা নিকাহ রেজিস্ট্রার (বিয়ের কাজি) হতে পারবে না মর্মে আইন মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত বহাল রেখে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের অনুলিপি প্রকাশিত হয়েছে। রায় প্রদানকারী বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের স্বাক্ষরের পর ওই রায় প্রাকাশিত হয় বলে গতকাল সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন রিটকারীর আইনজীবী মো. হুমায়ুন কবির।

আইনজীবী হুমায়ুন কবির জানান, ২০১৪ সালে দিনাজপুর জেলার ফুলবাড়িয়া পৌরসভার ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের নিকাহ রেজিস্ট্রার হিসেবে তিনজন মহিলার নাম প্রস্তাব করেন উপদেষ্টা কমিটি। তিন সদস্যের এ প্যানেল আইন মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়। ২০১৪ সালের ১৬ জুন আইন মন্ত্রণালয় ‘বাংলাদেশের বাস্তব অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে নারীদের দ্বারা নিকাহ রেজিস্ট্রারের দায়িত্ব পালন করা সম্ভব নয়’ মর্মে চিঠি দিয়ে তিন সদস্যের প্যানেল বাতিল করেন। পরে আইন মন্ত্রণালয়ের এ সিন্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন নিকাহ রেজিস্ট্রারের প্যানেলে এক নম্বর ক্রমিকে থাকা আয়েশা সিদ্দিকা। রিটের শুনানি নিয়ে আদালত ‘আইন মন্ত্রণালয়ের চিঠি কেন বাতিল করা হবে না’ এই মর্মে রুল জারি করেন। গত বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে হাইকোর্ট রিট আবেদনটি খারিজ করে দেন। বাংলাদেশের সামাজিক ও বাস্তব অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে নারীরা নিকাহ রেজিস্ট্রার হতে পারবে না মর্মে আইন মন্ত্রণালয়ের সিন্ধান্ত বহাল রাখেন।

অ্যাডভোমেট মো. হুমায়ুন কবির বলেন, আদালত রায়ের পর্যবেক্ষণে বলেছেন, নারীরা মাসের একটি নির্দিষ্ট সময় ফিজিক্যাল ডিসকোয়ালিফিকেশন (শারীরিকভাবে অসুস্থ) থাকেন। মুসলিম বিবাহ হচ্ছে একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান এবং আমাদের দেশে বেশির ভাগ বিয়ের অনুষ্ঠান হয় মসজিদে। ওই সময়ে নারীরা মসজিদে প্রবেশ করতে পারে না এবং তারা নামাজও পড়তে পারে না। সুতরাং বিয়ে যেহেতু একটা ধর্মীয় অনুষ্ঠান। এই বাস্তবতার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশে নারীদের দিয়ে নিকাহ রেজিস্ট্রারের দায়িত্ব পালন সম্ভব নয়। এ পর্যবেক্ষণ দিয়ে আদালত রুল খারিজ করে দিয়েছেন।

সংশ্লিষ্ট বেঞ্চের রাষ্ট্রপক্ষের আইন কর্মকর্তা ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এস কে সাইফুজ্জামান বলেন, আদালত পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন, মুসলিম ম্যারেজ রেজিস্ট্রারদের কিছু নিয়মকানুন মেনে চলতে হয়। কিন্তু প্র্যাকৃতিকভাবে নারীদের প্রত্যেক মাসে একটি বিশেষ সময় আসে যে সময়টাতে ধর্মীয়ভাবেই নারীরা মসজিদেও যেতে পারেন না। আবার নামাজও পড়তে পারেন না। এ রকম সময় যদি কারও বিয়ের অনুষ্ঠান হয়। সেখানে তো কোনো নারী যেতে পারবে না। অন্যান্য পাবলিক অফিসে নারীরা যে কাজ করেন, আর ম্যারেজ রেজিস্ট্রার হিসেবে কার্যক্রমটা আলাদা। বিয়ে শুধু সামাজিক অনুষ্ঠান নয়, এটা ধর্মীয় অনুষ্ঠানও বলে মন্তব্য করেছেন আদালত।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877